১৯ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারী মাস। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার করার দাবিতে উত্তাল ঢাকার রাজপথ। আন্দোলন থামাতে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী ১৪৪ ধারা জারী করে, সেই ধারা ভঙ্গ করে মিছিলে প্রাণ দেয সালাম, রফিক, জব্বারসহ আরও নাম না জানা তরুণ দল। ভাষা আন্দোলনের সেসব মিছিলে তখন অংশ নেন খালেদা মনযুর ই খুদা। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে আহত মিছিলের সাথীদের রক্ত দিতে ছুটে যান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ভাষা আন্দোলনে তার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে সম্মান জানাতে একুশে পদক ২০২৩ তুলে দেওয়া হয় তার হাতে।

জাতির জনকের কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক গ্রহণ করেন তিনি। পদক গ্রহণ করতে হুইল চেয়ারে বসে মঞ্চে প্রবেশ করলে প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ আন্তরিকতায় কিছুটা এগিয়ে গিয়ে হাত রাখেন মনযুর ই খুদার মাথায়। তুলে দেন রাষ্ট্রের সম্মানজনক বেসামরিক পদক। এসময় কিছুটা নীচু হয়ে কথা বলতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।

জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষা, গবেষণা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিভিন্ন খাতে অবদানের জন্যে ১৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের হাতে ‘একুশে পদক ২০২৩’ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই পদক প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে সরকার। এ বছর ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে তিনজন, মুক্তিযুদ্ধে একজন, শিল্পকলায় আটজন (অভিনয়, সঙ্গীত, আবৃত্তি, চারু ও চিত্রকলা), রাজনীতিতে দু’জন, শিক্ষায় একজন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান, সমাজসেবায় একজন ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকতা, গবেষণা এবং ভাষা ও সাহিত্যে একজন করে পুরস্কার দেওয়া হয়।

ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য খালেদা মঞ্জুর-ই খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) এবং হাজী মোহাম্মদ মজিবুর রহমানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।

শিল্পকলা বিভাগে অভিনয় ক্যাটাগরিতে মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ এবং সংগীত বিভাগে মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম ও ফজল-এ-খোদা (মরণোত্তর), আবৃত্তি বিভাগে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শিল্পকলায় নওয়াজীশ আলী খান এবং চিত্রকলা বিভাগে কনক চাঁপা চাকমা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে মমতাজ উদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ডা. মো. আব্দুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় সাইদুল হক, অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলাম (মরণোত্তর), রাজনীতিতে আখতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামানকে পুরস্কার পেয়েছেন।

এ ছাড়া শিক্ষা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং সমাজ সেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।