বাঁধন আর রেহানা, পরস্পরকে প্রভাবিত করেছে : বাঁধন
কান উৎসবে প্রথমবার স্থান পেলো বাংলাদেশি সিনেমা
শামিমা দোলা : ৩ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় তখন বিকেল তিনটা। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ইউজিসি নর্ম্যান্ডি প্রেক্ষাগৃহে কান উৎসবের ৭৪তম আসরে পরিচালক থিঁয়েরি ফ্রেমোর কন্ঠে উচ্চারিত হয় বাংলাদেশ, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ আর তার ছবির নাম। এভাবেই রচিত হলো ইতিহাস! কান উৎসবের ৭৪-তম আসরে অফিসিয়াল বিভাগ ‘আঁ সার্তেইন রিগার্দে’মনোনীত হলো বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদে’র রেহানা মারিয়ম নূর ছবিটি।বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এই প্রথম কোন সিনেমা বিশ্বের মর্যাদাকর কান চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনীত হলো। ইতিহাস গড়া এই চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। নিউজ নাউ বাংলার সাথে কথা বলেছেন তিনি। ছবিতে অভিনয়, কেন্দ্রীয় চরিত্রে বাঁছাই প্রক্রিয়া এসব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন আজমেরী হক বাঁধন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিউজ নাউ বাংলা’র সম্পাদক শামীমা দোলা। (দেখুন ভিডিওসহ)
প্রশ্ন ছিল, এত বড় অর্জনে এখন অনুভুতিটা কেমন?
বাঁধনের সপ্রতিভ উত্তর, “অবশ্যই ভীষণ ভাল লাগছে। এমন একটি অর্জন নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের। এই অর্জনের পুরো কৃতিত্ব ছবির পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ এবং পুরো টিমের। এই সম্মান পুরো দেশের, সবাই উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত। ”
নিউজ নাউ বাংলাকে জানালেন কেমন করে এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রের জন্যে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সেই অভিজ্ঞতা। অভিনয়ের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকলেও রীতিমত অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বাঁধনের ভাষায়,” অডিশনের কথা শুনে বিস্মিত হয়েছি। আমি ভেবেছিলাম রেহানা মারিয়ম নূর ছবির আরেকটি চরিত্রের জন্যে আমাকে নির্বাচন করা হয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, রেহানা চরিত্রটিতে কে অভিনয় করছেন? আমাকে জানানো হলো, আমরা রেহানাকেই খুঁজতে এসেছি অর্থাৎ আমাকেই নির্বাচন করা হয়েছে রেহানা চরিত্রের জন্যে।”
২০১৮ সালের শেষদিকে এই ছবির নির্মাণ হয়েছে। কুমিল্লার একটি মেডিকেল কলেজে পুরো ছবির শুটিং হয়েছে। এক মাস শুটিং হয়েছে। রিহার্সেল হয়েছে তিনমাস।
বাঁধন বললেন পরিচালকসহ সকল সহ শিল্পীর প্রচেষ্টায় চলচ্চিত্রটি পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রত্যেকেই তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে চলচ্চিত্রটি নির্মাণে। বাঁধন বললেন, “কো- আর্টিস্ট প্রত্যকেই তার সর্বোচ্চ এফোর্ট দিয়েছে। আমার ভাসুর এর চরিত্র, আমার ভাই -এর চরিত্র এমনকি বাচ্চার চরিত্রটি যে করেছে সে কখনো অভিনয় করেনি, সেও অসাধারণ অভিনয় করেছে।
বাঁধন জানালেন একটি ভাল চলচ্চিত্রে কাজ করার দীর্ঘ দিনের বাসনা ছিল। তার সে বাসনা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের রেহানা মারিয়ম নূর ছবিটির মধ্য দিয়ে পূরণ হয়েছে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণে পূরো প্রক্রিয়াতেই ভিন্নতা ছিল। বাঁধন বললেন, ” আমার চোখের পলক কতটা ফেলবো, আইবল কতটা নড়বে, কোন উচ্চতায় কোন শব্দ ডেলিভারি দিবো, সব পরিচালকের ঠিক করে দেওয়া। এক একটা শট ২০/২৫ টা টেকে ওকে হয়েছে। আমি কখনই পরিচালক যা চেয়েছেন তা শতভাগ দিতে পারিনি। বড়জোর ৮০ ভাগ দিতে পেরেছি। ”
বাঁধনের জীবনের সাথে রেহানা চরিত্রটির কোন মিল আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বলেন, “বাহ্যিকভাবে বাঁধন আর রেহানার কোন মিল নেই। বাঁধনের জীবনের অভিজ্ঞতা রেহানা চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলতে সহযোগিতা করেছে। আবার রেহানা প্রভাব ফেলেছে বাঁধনের জীবনে।”