Leadচট্রগ্রামজেলার খবর

সীমান্তে দুই মাসে তিন বাংলাদেশি হত্যা!

আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলি কিংবা নির্যাতনে প্রায়ই প্রাণহানি ঘটছে। জেলার কসবা, আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলা সীমান্তে লোকজন দেখলেই পাখির মতো গুলি মারছে কিংবা ধরে নিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফ।

দুই মাসের ব্যবধানে এ জেলার সীমান্তে বিএসএফের হাতে প্রাণ গেছে তিন বাংলাদেশির। আহত হয়েছেন এক ভারতীয় নাগরিকসহ দুজন। বিএসএফের এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা যায়, সর্বশেষ গত ৪ মে রাতে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেছে মো. সাকিব নামে ১৮-১৯ বছর বয়সী এক তরুণের। উপজেলার মাদলা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাকিব মারা যান।

একই ঘটনায় সুজন বর্মণ নামের এক ভারতীয় নাগরিকও গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সুজন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার মঙ্গল বর্মণের ছেলে। তাঁকে ঢাকায় একটি হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিজিবির সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত ৮ এপ্রিল জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে মারা যান মুরাদুর রহমান মুন্না (৩৬) নামের এক ব্যক্তি। গত ১ মার্চ জেলার কসবা উপজেলার পুটিয়া সীমান্তে আল-আমীন নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ।

জেলার আখাউড়া উপজেলার ইটনা সীমান্তে ২৫ এপ্রিল বিএসএফের গুলিতে আসাদুল ইসলাম (২৮) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।

নিহত মুন্নার পরিবারের দাবি, তিনি ধানি জমি দেখতে সেজামুড়া সীমান্তের কাছে যান। এ সময় বিএসএফের কয়েকজন সদস্য তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে যান। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে নিহত আল-আমিনের পরিবার বলছে, বাড়ির একটি গরু ছুটে গেলে সেটাকে আনতে সীমান্ত এলাকায় যাওয়ার পর তাঁর ওপর গুলি করা হয়।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, ‘সীমান্তে পাহারা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএসএফকে আরো সতর্ক ও ধৈর্য ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিকদেরও সীমান্তে চলাচলে সতর্ক থাকতে হবে।’

বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান জানান, বিএসএফের প্রতিটি গুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা হয়। কিভাবে কী ঘটেছে, সেগুলো জানার চেষ্টা করা হয়।

নিউজ নাউ বাংলা/০৯ মে ২০২৫/ এসি/ জেডআরসি

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button